নিজস্ব প্রতিবেদক:
সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘ, ময়মনসিংহ এবং চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ময়মনসিংহ জেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে 'সর্বত্র বাংলা ভাষার সর্বোচ্চ প্রযোগ, বাংলা ভাষা প্রচলন আইন ১৯৮৭ এর যথাযথ বাস্তবায়ন এবং সকল জাতিসত্তার মাতৃভাষায় শিক্ষালাভের সুযোগ' বিষয়ক আলোচনা সভা ০১ মার্চ ২০২৪ তারিখ বিকালে শহরের জয়নুল আবেদিন পার্কস্থ বধ্যভূমিতে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনাসভায় আলোচকবৃন্দ বলেন, বাংলা ভাষার উৎকর্ষতা সাধনের জন্য দেশের সর্বত্র ভাষার সর্বোচ্চ প্রয়োগ এবং ১৯৮৭ সালে প্রণীত বাংলা ভাষা প্রচলন আইন বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই।
তারা বলেন, মাতৃভাষার অন্তর্নিহিত সার্থকতা নিহিত সর্বত্র যথাযথ প্রয়োগে। রাষ্ট্রযন্ত্রকেও যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে এবং নাগরিক হিসেবে প্রাত্যহিক জীবনে ব্যক্তিকেও যেমন মাতৃভাষা চর্চার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সকল দপ্তর, আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ সকল দাপ্তরিক কাজে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। দেশের আভ্যন্তরীণ দাপ্তরিক পত্রালাপ শতভাগ বাংলায় যেন করা হয়। দাপ্তরিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে শতভাগ বাংলা ব্যবহার করার লক্ষে ১৯৮৭ সালে 'বাংলা ভাষা প্রচলন আইন' প্রণয়ন করা হয়েছে।
এই আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের সর্বত্র সরকারী অফিস, আদালত, আধা-সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নথি ও চিঠিপত্র, আইন-আদালতের সওয়াল জবাব ও অন্যান্য আইনানুগ কার্যাবলী অবশ্যই বাংলায় লিখতে হবে। কিন্তু এই আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। ভাষাকেন্দ্রিক বিরাজমান নেতিবাচক চিত্র বাংলা ভাষার প্রতি চরম অবজ্ঞা।
আলোচকবৃন্দ বলেন, শিক্ষার মাধ্যম একটি জাতির মাতৃভাষার উৎকর্ষ সাধনে অনন্য অবদান রাখে। যদি শিক্ষার মাধ্যম হয় একমূখী অর্থাৎ মাতৃভাষাকেন্দ্রিক। কিন্তুু আমাদের দেশে শিক্ষাদানের মাধ্যম আজ বহুমূখী। এই বহুমূখী শিক্ষা মাধ্যম অপসারণ করে ভাষার উৎকর্ষতার স্বার্থে বাংলা ভাষাাকেন্দ্রিক একমূখী শিক্ষা মাধ্যম একান্ত প্রয়োজন। বিশ্বায়নের এ যুগে বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানী বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। কিন্তুু বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানীগুলো ব্যবসা করলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাদের কার্যক্রমে তারা বাংলা ভাষা ব্যবহার করবে কিনা সে ব্যাপারে কোন দিকনির্দেশনা নেই।
ফলে আইনগতভাবে তারা বাংলা ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে ধরাছোঁয়ার বাইরে। অর্থাৎ বহুজাতিক কোম্পানীগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাদের কার্যক্রমের নথিপত্রে বাংলা ভাষা ব্যবহারে বাধ্য নয়।
বহুজাতিক কোম্পানীগুলো যেহেতু বাংলা ভাষাভাষীদের সাথে লেনদেন করে থাকে সেহেতু তারা বাংলাভাষা ব্যবহার করবে না কেন? তাদের গ্রাহক বাংলাদেশের নাগরিকগণই। বাংলাদেশের ভূখন্ডে ব্যবসা করতে হলে বহুজাতিক কোম্পানীগুলো তাদের দৈনন্দিন কাজে বাংলা ব্যবহার করবে এ ধরণের নীতিমালা প্রয়োজন।
আলোচকবৃন্দ আরো বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতিসত্তার নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে। তাদেরও অধিকার রয়েছে নিজ ভাষায় শিক্ষালাভ। নৃ-গোষ্ঠীসমূহের কোন ভাষা যেন হারিয়ে না যায় সে ব্যাপারে রাষ্ট্রকে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে। রাষ্ট্রীয়ভাবে নৃ-গোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকায় তাদের ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষালাভের সুযোগ দান নিশ্চিত করা একান্ত প্রয়োজন।
বীরমুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া'র সভাপতিত্বে এবং ফজলুল হক রনি এর সঞ্চালনায় আলোচনায় বক্তব্য রাখেন আবৃত্তিকার মারফুয়াত টিপু, মঞ্জুরুল হাসান খান, কবি সাইদ ইসলাম, আরমান হোসেন ইমন, শাহরীয়ার আহমেদ আশিক, আহসান কাদের মাহমুদ, আব্দুল হান্নান আল আজাদ, বাপ্পু সরকার প্রমূখ। কবিতা আবৃত্তি করেন কবি সৈয়দা জেবুন্নেছা হুদা, মিনামি আহমেদ নামি। ইমতিয়াজ আহমেদের লেখা 'মাতৃভাষা এবং এর সার্থকতা' শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন রাব্বি রিয়াজ।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আমিনূর ইসলাম রাব্বি,
প্রধান কার্যালয়: মতিঝিল প্লাজা (৪র্থ তলা), ১৯৩/সি-১,ফকিরাপুল,ঢাকা-১০০০। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ৬৮,চরপাড়া, মেডিকেল কলেজ গেইট, সদর,ময়মনসিংহ। মোবাইল : ০১৩২১-৬৫০১০০, অফিস: ০১৮৯৬-২৮২০৪০, সম্পাদক : ০১৩২১-৬৫০১০০
Email : dailynobovoor@gmail.com
Copyright © 2024 দৈনিক নব ভোর. All rights reserved.