নিজস্ব প্রতিবেদক :
মহান শহীদ দিবস ২০২৪ এর প্রথম প্রহরে ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় শহীদমিনার প্রাঙ্গনে অফিস, আদালত, ব্যাংকবীমা, বহজাতিক কোম্পানীসহ সর্বত্র বাংলা ভাষার সর্বোচ্চ প্রয়োগ এবং বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭ যথাযথ বাস্তবায়নের দাবী জানায় সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘ। এ দাবী সম্বলিত ব্যানার নিয়ে অবস্থানকালে সমাজ রূপান্তরের সংগঠনবৃন্দ বলেন, বাংলা ভাষার উৎকর্ষতা সাধনের জন্য দেশের সর্বত্র ভাষার সর্বোচ্চ প্রয়োগ ও ১৯৮৭ সালে প্রণীত আইন বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই। তারা বলেন, মাতৃভাষার অন্তর্নিহিত সার্থকতা সর্বত্র যথাযথ প্রয়োগে। নাগরিক হিসেবে প্রাত্যহিক জীবনে ব্যক্তিকেও যেমন মাতৃভাষা চর্চার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করতে হবে তেমনি রাষ্ট্রযন্ত্রকেও যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। সকল দপ্তর, আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ সকল দাপ্তরিক কাজে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। দেশের আভ্যন্তরীণ দাপ্তরিক পত্রালাপ শতভাগ বাংলায় যেন করা হয়। দাপ্তরিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে শতভাগ বাংলা ব্যবহার করার লক্ষে ১৯৮৭ সালে ‘বাংলা ভাষা প্রচলন আইন’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশের সর্বত্র সরকারী অফিস, আদালত, আধা-সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নথি ও চিঠিপত্র, আইন-আদালতের সওয়াল জবাব ও অন্যান্য আইনানুগ কার্যাবলী অবশ্যই বাংলায় লিখতে হবে। কিন্তু এই আইনের প্রয়োগ আজ কোথায়? ভাষাকেন্দ্রিক বিরাজমান চিত্র জনমনে এই প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
সংগঠকবৃন্দ বলেন, শিক্ষার মাধ্যম একটি জাতির মাতৃভাষার উৎকর্ষ সাধনে অনন্য অবদান রাখে। যদি শিক্ষার মাধ্যম হয় একমূখী অর্থাৎ মাতৃভাষাকেন্দ্রিক। কিন্তুু আমাদের দেশে শিক্ষাদানের মাধ্যম আজ বহুমূখী। এই বহুমূখী শিক্ষা মাধ্যম অপসারণ করে ভাষার উৎকর্ষতার স্বার্থে বাংলা ভাষাাকেন্দ্রিক একমূখী শিক্ষা মাধ্যম একান্ত প্রয়োজন। বিশ্বায়নের এ যুগে বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানী বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। কিন্তুু বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানীগুলো ব্যবসা করলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাদের কার্যক্রমে তারা বাংলা ভাষা ব্যবহার করবে কিনা সে ব্যাপারে কোন দিকনির্দেশনা নেই। ফলে আইনগতভাবে তারা বাংলা ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে ধরাছোঁয়ার বাইরে। অর্থাৎ বহুজাতিক কোম্পানীগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাদের কার্যক্রমের নথিপত্রে বাংলা ভাষা ব্যবহারে বাধ্য নয়। বহুজাতিক কোম্পানীগুলো যেহেতু বাংলা ভাষাভাষীদের সাথে লেনদেন করে থাকে সেহেতু তারা বাংলাভাষা ব্যবহার করবে না কেন? তাদের গ্রাহক বাংলাদেশের নাগরিকগণই। বাংলাদেশের ভূখন্ডে ব্যবসা করতে হলে বহুজাতিক কোম্পানীগুলো তাদের দৈনন্দিন কাজে বাংলা ব্যবহার করবে এ ধরণের নীতিমালা প্রয়োজন।
ভাষার প্রশ্নে মৌলিক দাবীতে অবস্থানকালে বাংলা ভাষার উৎকর্ষতার বিষয়ে বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের সংগঠক শাহরিয়ার আহমেদ আশিক, সৈয়দ আরমান হোসেন, মিঠুন চন্দ্র দত্ত, তানভীর আহমেদ তন্ময়, রায়হান আকন্দ হৃদয়,জুয়েল মিয়া প্রমূখ।