নিজস্ব প্রতিবেদক :
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার অষ্টধার হাট ও বাজারের খাজনা উত্তোলন নিয়ে নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন পাইকারি বাজার ব্যবসায়ী ও খুচরা বিক্রেতারা। বেচাকেনা না থাকার পরও অতিরিক্ত খাজনা এবং জায়গার ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করতে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। একেক জনের কাছ থেকে একেক রকম খাজনা নিচ্ছেন ইজারাদার শরিফুল ইসলাম। কিন্তু খাজনা নিয়ে দিচ্ছেন না কোন রশিদ।
সরকারি নিয়ম না থাকলেও একই হাট-বাজারে সাব ইজারা দিয়েছেন ইজারাদার। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে সরকার নির্ধারিত খাজনা থেকে কয়েকগুন বেশি টাকা তোলা হচ্ছে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়িদের কাছ থেকে। চাহিদামত খাজনা না দিলে করছেন মারধরও। ইজারাদার দিচ্ছেন না কোন খাজনা আদায়ের রশিদ।
পুরো বাজারে কোথাও নেই সরকার নির্ধারিত খাজনার আদায়ের তালিকা। দূরদুরান্ত থেকে আসা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলা হচ্ছে অধিক টাকা। ফলে দীর্ঘ বছরের ঐতিহ্যবাহী ময়মনসিংহ সদর উপজেলার অষ্টধার হাট ইজারাদারের কবলে পড়ে হারাতে বসেছে তার ঐতিহ্য। এ নিয়ে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন মহলে অভিযোগ তুলেও পাচ্ছেন না কোন প্রতিকার। এ কারণে ব্যবসার পাঠ চুকাতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই।
এ ব্যপারে মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সোহেল বলেন, চটে বসে জায়গার ভাড়া দিয়েই মাছ বিক্রি করি। বেচা-কেনার শুরুতেই ইজারাদারের লোকজন দেড়শ থেকে দুইশত টাকা খাজনা বাবদ নেয়। কিন্তু নিয়মিত খাজনা দিচ্ছি আজ পর্যন্ত কোন রশিদ পাই নাই। আরেক মুদির দোকান ব্যবসায়ী বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আমাদের কাছ থেকে একই রেটে খাজনা নেয়ার বিধান থাকলেও ইজারাদারের লোকজন একেকজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে একেক রকম খাজনা তোলেন। আমরা বহুবার আবেদন করেছি যে বাজারে সরকারি চার্ট টানিয়ে দেয়া হোক। কিন্তু খারাপ ব্যবহার ছাড়া আমরা এর কোন প্রতিকার পাইনি।
ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই বাজারের খাজনা আদায়ের কোন নিয়ম নেই।
ব্যবসায়ীদের সুরক্ষার কোন ব্যবস্থা নাই। রোদ-বৃষ্টিতে খোলা আকাশের নিচে কর্দমাক্ত মাটিতে বসে ব্যবসা করতে হয়। কিন্তু খাজনায় কোন মাফ নাই। সরকারি রেটের নিয়ম ৭ টাকা। কিন্তু নিচ্ছে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। এমনকি অন্য এলাকার বাড়ির গাছ বিক্রি করলেও সেই বাড়ি গিয়ে তারা খাজনা আদায় করেন। পাইকারি বিক্রেতা মিলটন তালুকদার বলেন তারা যা চায় আমরা তা দিতে বাধ্য। না দিলে গলা ধাক্কা দেয়।
ব্যবসায়ী মোহাম্মদ খচরু অভিযোগ করে বলেন, হাট-বাজার ইজারা দরপত্রেই ৭নং শর্তাবলিতে উল্লেখ আছে সরকার অনুমোদিত টোল আদায়ের হার দোকান প্রতি মাত্র ৭টাকা। কিন্তু ইজারাদার বোঝান শতকরা ৫ টাকা হারে খাজনা দিতে হবে। অথচ ৭নং শর্তাবলীর এটা বিপরীত।
এ ব্যপারে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ইজারাদার শরিফুল ইসলাম, তবে সরাসরি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি নন তিনি,গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতির সামনেই,হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যায় ইজারাদার শফিকুল ইসলাম।
হাট-বাজার ইজারা দেয়ার কর্তৃপক্ষ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইফতেখার ইউনুস অভিযোগ ও অনিয়মের কথা কিছুই জানেন না। তিনি বলেন সরকার নির্ধারিত খাজনা উল্লেখ করে বাজারে চার্ট টানিয়ে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। খাজনার রশিদ প্রদানের নিয়ম করার নির্দেশ দিয়েছি। বাজারের পরিবেশ সুন্দর করার জন্য কয়েকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি।